কেবল ধনীরাই কাড়ি কাড়ি টাকার মালিক হবে আর সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে থাকবে এটা যৌক্তিক নয়। বরং গরিবেরও বাঁচার অধিকার আছে। ধনীর ধন শুধু তার একার নয়, অসহায়কে সাহায্য করার জন্যও তার ধন ব্যবহার করতে হবে। গরিবরা যখন না খেয়ে থাকে তখন পেটের দায়ে তারা অনৈতিক কাজ করতে বাধ্য হয়। সেজন্য তাদেরকে যদি শাস্তি পেতে হয় তবে ধনীর ধন গরিবকে না দিয়ে যে অপরাধ করেছে তারও শাস্তি হওয়া উচিত।
সোশিয়ালিস্টিক চেতনায় প্রাবন্ধিক আলোচ্য প্রবন্ধে এই যুক্তিগুলো তুলে ধরেছেন, যা প্রবন্ধের মূলভাব। উদ্দীপকটিও এই বক্তব্য ধারণ করে আছে। প্রশ্ন ১৪ ইলিশ মাছের বংশ বৃদ্ধির জন্য সরকার কিছুদিনের জন্য ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ করেছে।
এ জন্য দরিদ্র জেলেদের যেন অনাহারে না থাকতে হয় সেজন্য সরকার তাদের নানাভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। তারপরও কিছু জেলে সরকারি আদেশ অমান্য করে নদীতে ইলিশ মাছ ধরছে। পুলিশের হাতে ধরা পড়লে তারা জানায় যে, সরকারি সাহায্য বণ্টন করা যাদের ওপর দায়িত্ব তারা যথাযথভাবে তা বণ্টন না করার কারণে জেলেরা অভাবের তাড়নায় আইন অমান্য করে ইলিশ মাছ ধরছে। মাইলস্টোন করে। প্রশ্ন নম্বর-১/
ক. ‘সরিষাভোর’ শব্দের অর্থ কী? খ. ‘অতএব চোরের দণ্ডবিধান কর্তব্য।’- ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের জেলেদের সাথে ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের কোন চরিত্রের সাদৃশ্য আছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘জেলেরা যথাযথভাবে সরকারি সাহায্য পেলে তাদের আর চুরি করার প্রয়োজন হতো না।’ উক্তিটি উদ্দীপক ও ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের আলোকে বিচার করো ।
চোরকে শাস্তি না দিলে সমাজের সাধারণ মানুষ শান্তি পারবে না বলে কমলাকান্ত প্রশ্নোক্ত কথা বলেছে। চুরি সমাজের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নষ্ট করে। এতে সমাজে বিশৃঙ্খল ও অশান্তিকর অবস্থা গড়ে ওঠে। সমাজ ভারসাম্যহীনতার সম্মুখীন হয়। চোরকে শাস্তি না দিলে এই সমস্যা দিন দিন বাড়তে থাকে। এজন্য চোরের দণ্ডবিধান কর্তব্য। ching
সরিষাভোর’ শব্দের অর্থ ক্ষুদ্র।
না উদ্দীপকের জেলেদের সাথে ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের বিড়ালের সাদৃশ্য রয়েছে। ‘বিড়াল’ রচনায় বিড়াল কমলাকান্তের জন্য রাখা দুধ চুরি করে খায়। তার এ চুরির কারণ হিসেবে সমাজের উঁচু শ্রেণির মানুষের কাপর্ণ ও অবহেলাকে দায়ী করে। তার মতে, ধনীরা পাঁচশ জনের আহার একা সংগ্রহ করায় এবং উদ্বৃত্ত সম্পদ দরিদ্রদের মাঝে বন্টন করে না দেওয়ায় দরিদ্ররা ক্ষুধার তাগিদে চুরি করতে বাধ্য হয়।
উদ্দীপকে জেলেদের অধিকারচেতনা প্রকাশ পেয়েছে। ইলিশ মাছের বংশ বৃদ্ধির জন্য সরকার কিছুদিনের জন্য ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ করেছে। জেলেদের যেন অনাহারে থাকতে না হয় সেজন্য সরকার নানা সহযোগিতা করে যাচ্ছে। কিন্তু এই সাহায্য বণ্টনের দায়িত্ব যাদের ওপর রয়েছে তারা যথাযথ বণ্টন না করায় ক্ষুধার তাগিদে জেলেরা আইন অমান্য করে ইলিশ মাছ ধরতে বাধ্য হয়। জেলেদের এমন আচরণ বিড়াল’ রচনার বিড়ালের সদৃশ। বিড়ালও ক্ষুধার তাগিদে নিজ অধিকার চেতনায় চুরি করতে বাধ্য হয়। তাই উদ্দীপকের জেলেদের সাথে ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের বিড়াল চরিত্রের সাদৃশ্য রয়েছে ।
| সম্পদের সুষম বণ্টন হলে ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের বিড়াল ও উদ্দীপকের জেলে উভয়েরই আর চুরি করার প্রয়োজন হতো না । ‘বিড়াল’ রচনায় বর্ণিত হয়েছে, ধনী ব্যক্তির স্বভাবের কারণেই দরিদ্ররা চুরি করে। কারণ কৃপণ ধনী দরিদ্রের মাঝে সম্পদ বিতরণ না করে নিজেকে আরও ধনী করতে ব্যস্ত থাকে। যার কারণেই বিড়াল কমলাকান্তের দুধ চুরি করে খায়। এখানে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য, সামাজিক নানা অসঙ্গতির বিষয় | বিড়াল ও কমলাকান্তের কথোপকথনের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে।
উদ্দীপকে জেলেদের বঞ্চনার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। সরকারি সাহায্য | বণ্টন করার জন্য যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত হয় তারা যথাযথভাবে জেলেদের মাঝে সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টন না করায় জেলেরা তাদের মৌলিক অধিকার থেকে | বঞ্চিত হয়। অভুক্ত এসব জেলে ক্ষুধার তাড়নায় বাধ্য হয়ে আইন অমান্য করে ইলিশ মাছ ধরতে গিয়ে পুলিশের কাছে ধরা পড়ে। উদ্দীপকের বণ্টনকারীদের মানসিকতা ও আচরণ ‘বিড়াল’ রচনার কৃপণ-ধনীদের মাঝেও ‘বিড়াল’ রচনায় লেখকের কল্পিত বিড়ালের ভাষ্যমতে, দরিদ্রের চুরি করার প্রধান কারণ ধনীর কৃপণতা।
এ সমাজে দরিদ্রকে বঞ্চিত করে ধনীরা সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলে অথচ গরিবেরা থাকে অভুক্ত। ধনীরা সম্পদের তৈরি হতো না। বিড়ালেরও আর চুরি হবে বণ্টনকারীরা যদি সম্পদের সুষ্ঠু জেলেরা আইন অমান্য করে চুরি করত না। তাই ‘জেলেরা যথাযথভাবে সরকারি সাহায্য পেলে তাদের আর চুরি করার প্রয়োজন হতো না— উক্তিটি যথার্থ।
প্রশ্ন। ১৫ আফসার হতদরিদ্র। দিন আনে দিন খায়। ভাত আছে তো নুন নাই। ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে নিজের ঘরের চালের টিনে কেটে তার পা দুখানা হারায়। তার পরিবারের সবাই তাকে ছেড়ে চলে গেছে। এখন সে ঘরে অনাহারে মৃত্যুর দিন গোনে। তার ঘরের আশপাশে অনেকগুলো বহুতল ভবন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। আফসার মনে মনে ভাবে দেশ কেমন তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছে কিন্তু এই উন্নয়নে তার কী লাভ?
সরকার, ঢাকা।
ক. কার কথাগুলো সমাজ বিশৃঙ্খলার মূল ?
খ. সামাজিক ধনবৃদ্ধি বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের আফসারের সাথে ‘বিড়াল’ রচনার কোনো চরিত্রের সাদৃশ্য থাকলে ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘আমি যদি খাইতে না পারিলাম’ তবে সমাজের উন্নতি লইয়া কী করিব?’ আলোচনা করো।
১৫ নম্বর প্রশ্নের উত্তর: মার্জারের কথাগুলো সমাজ বিশৃঙ্খলার মূল।
সৃজনশীল প্রশ্নের ৫(খ) নম্বর উত্তর দ্রষ্টব্য।
উদ্দীপকের আফসারের সাথে বিড়াল’ রচনার বিড়ালের সাদৃশ্য রয়েছে। “বিড়াল’ রচনায় বিড়াল কমলাকান্তের জন্য রাখা দুধ চুরি করেছিল। কারণ সারাদিন প্রাচীরে প্রাচীরে, প্রাঙ্গণে প্রাঙ্গণে ঘুরেও সে কারো কাছে খাবার পায় না। বিড়ালটি দুর্বল বলে তাকে খাবার দেওয়ার কথা কেউ ভাবে না।
উদ্দীপকে আফসার দরিদ্রতার মধ্যে দিনাতিপাত করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সৃষ্ট দুর্ঘটনার কবলে পড়ে পা হারায় সে। এই অবস্থায় পরিবারের অন্য সদস্যরা তাকে একা ফেলে চলে যায়। বহুতল ভবনের নির্মাণাদি লক্ষ করে সে বুঝতে পারে দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।