in

“বিড়াল” রচনায় নির্দেশিত ধনিকশ্রেণি স্বার্থপর

বিড়াল’ রচনায় নির্দেশিত ধনিকশ্রেণি স্বার্থপর হলেও উদ্দীপকের বড়ো সাহেবের আচরণে সহানুভূতিপ্রবণতা প্রকাশ পেয়েছে। “বিড়াল’ রচনায় একটি বিড়ালের জবানিতে লেখক ধনিকশ্রেণির নির্মম মানসিকতার স্বরূপ ফুটিয়ে তুলেছেন। এই শ্রেণির মানুষেরা প্রয়োজনের চেয়েও অধিক সম্পদের অধিকারী। অথচ অসহায়, সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য তাদের মধ্যে কোনো মায়া-মমতা নেই। দরিদ্রের ব্যথায় ব্যথিত হওয়া তাদের জন্য নিতান্তই লজ্জার ব্যাপার।

অকারণ ভোগবিলাসে তারা মত্ত থাকে। অথচ ক্ষুধার জ্বালায় কষ্ট পাওয়া মানুষকে সামান্য খাদ্য দিতে কুণ্ঠাবোধ করে ।
উদ্দীপকে বর্ণিত বড়ো সাহেবের মাঝে আমরা দরিদ্রের প্রতি উদারতা ও সহমর্মিতার প্রকাশ দেখতে পাই। নিজের মেয়েকে তিনি ইদের জন্য দামি জামা কিনে দিয়েছেন। একই দামে জামা কিনেছেন কাজের মেয়ে মেহেরুননেছার জন্য। এমন মহানুভবতার দৃষ্টান্ত সত্যিই বিরল।

সেই মহানুভবতার স্পর্শ জল এনেছে মেহেরুননেছার চোখে। দরিদ্রের প্রতি গল্পের ধনিকশ্রেণির নির্লিপ্ত মানসিকতার বিপরীতে উদ্দীপকের বড়ো সাহেবের মাঝে তাদের প্রতি মানবিকতার প্রকাশ লক্ষ করা যায়। ঘ) উদ্দীপকে বর্ণিত বড়ো সাহেব ধনী ও দরিদ্রের মধ্যকার ব্যবধানকে অস্বীকার করার মাধ্যমে যে মানবিকতা প্রদর্শন করেছেন তাই ‘বিড়াল’ রচনার মূলসুর । “বিড়াল’ রচনায় কমলাকান্ত ও বিড়ালের মাঝে কাল্পনিক কথোপকথন তুলে ধরা হয়েছে। সে কথোপকথনে রয়েছে শ্রেণিবৈষম্যহীন সমাজ পড়ে তোলার প্রচ্ছন্ন আহ্বান। ধনীদের উদ্বৃত্ত সম্পদে যে দরিদ্রের অধিকার রয়েছে, সে কথাই রচনার মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।

উদ্দীপকে বর্ণিত বড়ো সাহেব একজন মহানুভব মানুষ। নিজের মেয়ে আর কাজের মেয়ের মাঝে তিনি কোনো পার্থক্য করেননি। দুজনকেই সমান চোখে দেখেছেন। ইদে দুজনের জন্যই একই দাম নিয়ে নতুন জামা কিনে এনেছেন। সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য এ ধরনের মনোভাব পোষণ করা সবার দায়িত্ব।

‘বিড়াল’ রচনায় এ বিষয়টিই তুলে ধরা হয়েছে। পৃথিবীতে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যকার ব্যবধান মানুষেরই সৃষ্টি । মানুষ চাইলেই এ ব্যবধান কমিয়ে আনতে পারে। এজন্য প্রয়োজন মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি। ধনী অকারণে বিলাসব্যসন পরিহার করে দরিদ্রের মৌলিক চাহিদা পূরণে সচেষ্ট হলে তৈরি হতে পারে স্নেহ-মমতা সহানুভূতিতে পূর্ণ চমৎকার এক সমাজ। ‘বিড়াল’ রচনার প্রতীকী চরিত্র বিড়ালের সূক্ষ্ম যুক্তিতর্কে মূলত এ ভাবনাটিই ফুটে উঠেছে। উদ্দীপকের বড়ো সাহেবও এ বিষয়টি অনুভব করেছেন অন্তর থেকে। তাই দরিদ্র কাজের মেয়েটিকে নিজের মেয়ের মতো করেই দেখেছেন ।

তাই সব দিক বিবেচনায় বলা যায়, আলোচ্য উক্তিটি যথার্থ।
প্রশ্ন ১৩ পদ্মা নদীর প্রবল ভাঙনে হাজার হাজার সর্বহারা মানুষ আশ্রয়ের জন্যঢাকায় আসে। বস্তিতে তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই হলেও খাবারের ব্যবস্থা হয় না। জীবনের তাগিদ তারা বিত্তশালী মানুষের দ্বারে গেলে দারোয়ান তাদের তাড়িয়ে দেয় এবং গাড়ির কাছে গেলে গ্লাস নামিয়ে কেউ তাদের দিকে তাকায় না ।
কলেজ অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ, ঢাকা। প্রশ্ন নম্বর-১/

ক. নেপোলিয়ান কোন যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলেন?
খ. ‘তেলা মাথায় তেল দেওয়া মনুষ্য জাতির রোগ।’- ব্যাখ্যা করো।
গ. ‘চোরের দণ্ড আছে, নির্দয়তার কি দণ্ড নাই’- উক্তিটি উদ্দীপকের আলোকে ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের ভাব ও ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের ভাব একই সূত্রে গাঁথা।”— তোমার মতামতের পক্ষে যুক্তি দাও ।

নেপোলিয়ান ওয়াটারলু যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলেন।
উক্তিটিতে সাধারণ মানুষ কর্তৃক ধনীদের তোষণের দিকটি ব্যক্ত হয়েছে।

বিড়ালের মতে ধনীকে তোষণ করা মানুষের সহজাত বৈশিষ্ট্য। যাদের ধন- সম্পদ আছে তারা দরিদ্র অসহায়কে তা দান করে না অথচ ধনী লোককে | আন্তরিকভাবে আপ্যায়ন করে। দরিদ্ররা অভুক্তই থেকে যায়। তাই বলা হয়েছে, ‘তেলা মাথায় তেল দেওয়া মনুষ্য জাতির রোগ ‘চোরের দণ্ড আছে, নির্দয়তার কি দণ্ড নাই। উদ্দীপকের পদ্মা নদীর ভাঙনে নিঃস্ব লোকগুলোকে নির্দয় বিত্তশালীরা সহযোগিতা না করে “বিড়াল’ প্রবন্ধের প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটির বাস্তব রূপ দিয়েছে।

“বিড়াল’ গল্পে লেখক প্রতীকাশ্রয়ে সমাজের অবহেলিত মানুষের অধিকারের বিষয়টি জোরালো করেছে। সেই সাথে অধিকার বঞ্চিত করে ধনী শ্রেণিও যে অপরাধ করছে, সে সত্য বিষয়টিও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। উদ্দীপকে একটি দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করে উক্ত বিষয়টিকে আরও দৃঢ় করেছে।

উদ্দীপকে পদ্মা নদীর ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে হাজার হাজার মানুষ ঢাকায় আশ্রয় নিয়েছে। তারা বস্তিতে কোনোমতে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছে। কিন্তু শুধু থাকতে পারলেই তো হবে না, ক্ষুধাও নিবারণ করা প্রয়োজন। সেজন্য বাঁচার তাগিদে তারা শহরের বিত্তশালীদের দ্বারে দ্বারে সাহায্যের জন্য যায়। বাড়ির দারোয়ানরা সাহায্য না দিয়ে তাদের তাড়িয়ে দেয় এবং গাড়িতে বসে থাকা সাহেবরাও গাড়ির গ্লাস বন্ধ করে রাখে, যাতে অসহায় লোকেরা সাহায্য চাইতে না পারে। শহুরে বিত্তবানদের এমন আচরণ অসহায় লোকদের প্রতি অমানবিকতার শামিল। ধনীরা যদি সাহায্য না করে তাহলে পেটের দায়ে এই নিঃস্ব মানুষগুলোকে হয়তো ভিন্ন পন্থা বেছে নিতে হবে।

তখন চোর বলে তাদেরকে শাস্তি দেওয়া হবে। অথচ সাহায্য না করে বিত্তবানরাও যে অপরাধ করেছে, সে কথা বলার কেউ যেন নেই। উদ্দীপকের এই বাস্তবতাই ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের বিড়ালের মুখ দিয়ে চোরের দণ্ড আছে, নির্দয়তার কি দণ্ড নাই’ বলা হয়েছে।

উদ্দীপকের সমাজের বঞ্চিত শ্রেণির অধিকার প্রতিষ্ঠার ভাব ও ‘বিড়াল’ | প্রবন্ধের ভাব একসূত্রে গাঁথা।
‘বিড়াল’ প্রবন্ধে সমাজের বঞ্চিত শ্রেণির অধিকার প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। তাদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখাও যে অর্থশালীদের দায়িত্ব, সে বিষয়টি প্রবন্ধে আলোকপাত করা হয়েছে। উদ্দীপকটিও প্রবন্ধে এই ভাবের প্রতিধ্বনি করেছে।

উদ্দীপকে সমাজের অধিকারবঞ্চিত মানুষের প্রতি ধনবান লোকদের দায়িত্ব- কর্তব্য জাগিয়ে তোলার ভাব প্রকাশিত হয়েছে। পদ্মা নদীর ভাঙনে সর্বস্ব হারানো লোকগুলো নিতান্ত অসহায়। তারা বাস্তবিকপক্ষেই সহযোগিতা পাওয়ার অধিকার রাখে। সেই আশা নিয়েই অসহায় লোকগুলো ঢাকায় এসেছিল। কিন্তু শহরের বিত্তবানরা তাদেরকে সহযোগিতা না করে দারোয়ান দিয়ে তাড়ায় এবং গাড়ির গ্লাস নামিয়ে অবজ্ঞা করে। ফলে অসহায় লোকগুলো জীবন সংকটে ভোগে।

‘বিড়াল’ প্রবন্ধে উদ্দীপকের অসহায় এই লোকগুলোর পক্ষেই মূল আলোচনা প্রবহমান ছিল। সেখানে কমলাকান্তের জন্য রাখা দুধটুকু বিড়াল খেয়ে ফেললে কমলাকান্ত তাকে মারতে উদ্যত হয়। আর তখনই বিড়ালের মুখ দিয়ে সমাজের অসহায় মানুষদের মনের আক্ষেপগুলো ফুটিয়ে তোলা হয়। সেখানে যুক্তি দিয়ে বলা হয়, সমাজের ধনাঢ্যদের কাছে দরিদ্রদের অধিকার

What do you think?

Written by Selfish World

Leave a Reply

বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক উপন্যাস কোনটি?

প্রশ্ন ১১] লোকমান সাহেবের গাড়িচালক সালাম তার বাড়িতেই থাকেন।