আমার ঘামের দাম ।
তায়ো দেবে না কি?
তবে শোন, ধান কাটা শেষ
কান্তের অবকাশ।
সুতরাং সময় কাটাতে
তোমার কন্ঠনালী
এবার সে ছোবে।
মি. কে. ১৬৪ প্রশ্ন নাম্বার-১, দি মিলেনিয়াম স্টারস স্কুল এন্ড কলেজ, রংপুর। এর নম্বর-
ক. ‘মার্জার’ অর্থ কী?
খ. ‘সমাজের ধনবৃদ্ধির অর্থ ধনীর ধনবৃদ্ধি।’ ব্যাখ্যা করো। ২
গ. উদ্দীপকে ‘বিড়াল’ প্রবন্ধে বর্ণিত বঞ্চনার কথা কতটা প্রতিফলিত
হয়েছে আলোচনা করো ।
ঘ. ‘বিড়াল’ প্রবন্ধে বর্ণিত অধিকারবোধের সশস্ত্র প্রকাশ ঘটেছে উদ্দীপকে— মন্তব্যটি মূল্যায়ন করো। 8
৫প্রার্থনা বেশি কিছু নয়। নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক. ‘মার্জার’ অর্থ- বিড়াল।
| সমাজের ধনবৃদ্ধি সম্পর্কে বিড়ালের মত প্রকাশ পেয়েছে আলোচ্য কমলাকান্তের মতে, যার যত ক্ষমতা, সে তত ধন সহায় করতে না পারলে কিংবা সঞ্চয় করে চোরের জ্বালায় নির্বিঘ্নে ভোগ না করতে পারলে কেউ ধন
উক্তিটিতে।
সঞ্চয় করবে না। তাতে সমাজের ধনবৃদ্ধি হবে না। কিন্তু সমাজের ধনবৃদ্ধি সম্পর্কে বিড়ালের মত ভিন্ন। তার মতে, সমাজের ধনবৃদ্ধি মূলত ধনীর ধনবৃদ্ধি। কারণ তাতে দরিদ্রদের অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয় না। প্রশ্নোক্ত উক্তিটিতে বিড়ালের স্বগতোক্তিতে লেখক সমাজের বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের ংহভাগ জুড়েই
সম্পর্কিত আত্মোপলব্ধি তুলে ধরেছেন।
বর্ণিত হয়েছে দরিদ্রের বঞ্চনার কথা। এ রচনায় বিড়ালের কন্ঠে পৃথিবীর সকল বঞ্চিত, নিষ্পেষিত, দলিতের ক্ষোভ-প্রতিবাদ-মর্মবেদনা যুক্তিগ্রাহ্যরূপে উচ্চারিত হয়েছে। তার মতে, ধনীরা পাঁচশ জনের আহার একা সংগ্রহ করায় এবং তাদের উদ্বৃত্ত সম্পদ বণ্টন করে না দেওয়ায় দরিদ্ররা চুরি করতে বাধ্য হয়। এক্ষেত্রে দোষ চোরের নয়, দোষ কৃপণ ধনীর। এছাড়া বিড়াল তার শারীরিক অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে যা বলেছে তাতে দরিদ্রের বঞ্চনার চিত্র সম্যকভাবে উন্মোচিত হয়। উদ্দীপকে সংক্ষিপ্ত পরিসরে এ বঞ্চনার দিকটি উপস্থাপিত হয়েছে।
উদ্দীপকে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার চেতনা প্রকাশ পেয়েছে। যেখানে বঞ্চিত মানুষের দাবি বেশি কিছু নয়, শুধু তার শ্রমের ন্যায্য মূল্য। কেননা শ্রমজীবী মানুষের শ্রমে ও ঘামে সভ্যতার চাকা গতিশীল হলেও তারা সে শ্রমের মূল্য পায় না। এই সংক্ষিপ্ত কথনে আমরা বুঝতে পারি, সমাজে দরিদ্ররা ধনীদের কাছ থেকে কোনো সাহায্য তো পায়ই না, এমনকি তাদের শ্রমের মূল্য পর্যন্ত ধনীরা দিতে চায় না। অন্যদিকে ‘বিড়াল’ রচনায় ধনী- দরিদ্রের বৈষম্য তুলে ধরার পাশাপাশি এরূপ অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে। যেমনটি প্রকাশ পেয়েছে উদ্দীপকেও। অর্থাৎ ‘বিড়াল’ প্রবন্ধে দরিদ্রের বঞ্চনার যে চিত্র রয়েছে তার ইঙ্গিতপূর্ণ উল্লেখ আছে উদ্দীপকে।
‘বিড়াল’ প্রবন্ধে বিড়ালের ‘সোশিয়ালিস্টিক’ মনোভাবের মধ্য দিয়ে দরিদ্রের অধিকারবোধ প্রকাশ পেয়েছে, যার সশস্ত্র প্রকাশ আমরা উদ্দীপকে দেখতে পাই ।
সাম্যবাদবিমুখ, ইংরেজশাসিত ভারতবর্ষে বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর ‘বিড়াল’ রচনায় একটি বিড়ালের মুখ দিয়ে শোষক-শোষিত, ধনী-দরিদ্র, সাধু-চোরের বৈষম্য ও সংগ্রামের কথা তুলে ধরেছেন। সেখানে বিড়াল পৃথিবীর সকল বঞ্চিত, নিষ্পেষিত, দলিতের ক্ষোভ-প্রতিবাদ-মর্মবেদনার ভাষ্যকার।
উদ্দীপকে বিড়ালের উচ্চকিত অধিকারবোধের সশস্ত্র প্রকাশ দেখি আমরা। উদ্দীপকের প্রথমেই আছে কীভাবে ধনী দরিদ্রকে তার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। কীভাবে দরিদ্রের প্রার্থিত শ্রমের দামও দেওয়া হচ্ছে না তাদের। আর তাদের দীর্ঘ বঞ্চনা থেকেই ক্ষুদ্ধ কৃষক প্রকাশ করছে তার সশস্ত্র অধিকারবোধ। যে কাস্তে শ্রমজীবীর অর্থ উপার্জনের উপায়, শ্রমজীবী কৃষক তার পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত হলে সেই কাস্তেকেই অস্ত্রে পরিণত করবে। শোষকের কন্ঠনালির রক্ত পান করে সেই কাস্তে দরিদ্রের অধিকার আদায় করবে।
‘বিড়াল’ রচনা এবং উদ্দীপকে সমাজের অবহেলিত, লাঞ্ছিত, সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র মানুষের অধিকার সচেতনতা প্রকাশ পেয়েছে। বিড়ালের মতে, প্রয়োজনের অতিরিক্ত ধন থাকতেও ধনীরা যে গরিবের দিকে মুখ তুলে তাকায় না— তাতেই সমাজে চুরি, রাহাজানিসহ অন্যান্য অরাজকতা ঘটে। আর এজন্যে দরিদ্রের চেয়ে বেশি দায়ী কৃপণ ধনী। বিড়ালের ভাষ্য, ‘অনাহারে মরিয়া যাইবার জন্য এ পৃথিবীতে কেহ আইসে নাই।’ ‘বিড়াল’ রচনায় বিড়ালের সোশিয়ালিস্টিক কথাবার্তায় যে অধিকার সচেতনতার কথা ব্যক্ত হয়েছে উদ্দীপকে সে অধিকারবোধেরই সশস্ত্র প্রকাশ ঘটেছে। সেদিক বিবেচনায় ‘বিড়াল’ রচনা ও উদ্দীপকের আলোকে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
প্রশ্ন ও মতলবপুর গ্রামে সুসজ্জিত স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, খেলার মাঠ, সোনাফলা ফসলি জমি সবই আছে কিন্তু হাসপাতালের চিকিৎসা বা স্কুল-কলেজের শিক্ষা গ্রহণের জন্যে যে আর্থিক সামর্থ্যের প্রয়োজন তা গ্রামের অধিকাংশ মানুষেরই নেই। ফসলি জমির ফসল ওঠে কয়েকটি ভূস্বামী পরিবারের গোলায়। তাই অর্ধাহারে, অশিক্ষায় আর চিকিৎসাহীনতায় মানবেতর জীবনযাপন করে মতলবপুর গ্রামের আশি ভাগ মানুষ। বাইরে থেকে দেখলে যে গ্রামকে আদর্শ মনে হয়, নিবিড় পর্যবেক্ষণে ভেসে ওঠে সে গ্রামের বঞ্চিত গ্রামবাসীর অসহায় মুখচ্ছবি। ক্লি. বো. ১৬% প্রশ্ন নম্বর-১/
ক. চোর অপেক্ষা শতগুণে দোষী কে? খ. ‘যখন বিচারে পরাস্ত হইবে তখন গম্ভীরভাবে উপদেশ প্রদান
করিবে।’ ব্যাখ্যা করো। গ. উদ্দীপকের ‘ফসল’-এর সাথে ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের ধনবৃদ্ধির
তুলনা করো । ঘ. “উদ্দীপকে ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের আংশিক বক্তব্য প্রতিফলিত হয়েছে।” বাক্যটির তাৎপর্য লেখো। 8
৬ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
| চোর অপেক্ষা শতগুণে দোষী কৃপণ ধনী।
| ‘যখন বিচারে পরাস্ত হইবে তখন গম্ভীরভাবে উপদেশ প্রদান করিবে—
| এটি কমলাকান্তের একটি আত্মরক্ষামূলক শ্লেষাত্মক বাণী । ‘বিড়াল’ প্রবন্ধে বিড়াল ও কমলাকান্তের মাঝে এক দীর্ঘ কাল্পনিক কথোপকথন হয়। এই কথোপকথনে বিড়াল ও কমলাকান্ত নিজ নিজ মত প্রকাশ করে। এতে বিড়াল ‘সোশিয়ালিস্টিক’, সুবিচারক, সুতার্কিক হওয়ায় কমলাকান্ত বিস্মিত ও যুক্তিতে পর্যুদস্ত হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে করণীয় সম্পর্কে প্রশ্নোক্ত শ্লেষ প্রকাশক মতবাদটির অবতারণা হয় ।