প্রয়োজনমতো সকলের নির্দেশ মেনে চলেন। তার জন্য আলাদা একটি কক্ষ দেওয়া হয়েছে। তার জন্য আলাদা করে কোনো রান্না হয় না। নিজেরা যা খান তাই তাকে দেওয়া হয়। লোকমান সাহেবের সন্তানরা তাকে ডাইয়া বলে ডাকে। সালামের পারিবারিক যেকোনো সমস্যা লোকমান সাহেব নিজের সমস্যা মনে করে সমাধান করেন। এভাবে সালাম যেন লোকমান সাহেবের পরিবারের সদস্য হয়ে যান। সেন্ট জোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ঢাকা।
ক. ওয়াটারলু কী?
খ. কেহ মরে বিল ছেঁচে, কেহ খায় কই।’- উক্তিটি দ্বারা কী
বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের কোন দিক থেকে বৈসাদৃশ্য
রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকটি ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের মূল বক্তব্যকে উপস্থাপন করেছে।”— মন্তব্যটি যাচাই করো। 8
১১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ওয়াটারলু বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস শহরের অদূরবর্তী ওয়ালোনিয়া অঞ্চলের অন্তর্গত একটি ছোট শহর।
কাজ করে একজন কিন্তু তার ফল ভোগ করে অন্যজন— এটি বোঝাতে প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করা হয়েছে।
প্রসন্ন গোয়ালিনী কমলাকান্তের জন্য এক বাটি দুধ রেখে যায়। কিন্তু সে নেশার ঘোরে অন্যমনস্ক থাকার সুযোগে বিড়াল তার দুধটুকু খেয়ে নেয়। দুধ খাওয়ার পর পরিতৃপ্ত বিড়ালের আচরণ দেখে কমলাকান্তের মনে হয়, বিড়াল ভাবছে, কেহ মরে বিল ছেঁচে, কেহ খায় কই। অর্থাৎ কমলাকান্তের জন্য দুধ রাখা হলেও তা সে পান করতে পারল না, বিড়ালই করল।
না উদ্দীপকের লোকমান সাহেবের সঙ্গে ‘বিড়াল’ প্রব ধনিকশ্রেণির
আচরণগত বৈসাদৃশ্য প্রকাশ পেয়েছে। ‘বিড়াল’ রচনায় একটি বিড়ালের জবানিতে লেখক ধনিকশ্রেণির নির্মম মানসিকতার স্বরূপ তুলে ধরেছেন। এ শ্রেণির মানুষেরা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি ধনসম্পদের অধিকারী। অথচ অসহায়, সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য তাদের কোনো মায়া-মমতা নেই। দরিদ্রের ব্যথায় ব্যথিত হওয়া তাদের জন্য নিতান্তই লজ্জার ব্যাপার। অকারণে ভোগবিলাসে তারা মত্ত থাকে। অথচ ক্ষুধার জ্বালায় কষ্ট পাওয়া মানুষকে সাহায্য করতে এরা কুণ্ঠাবোধ করে।
উদ্দীপকে বর্ণিত লোকমান সাহেবের মাঝে আমরা দরিদ্রের প্রতি উদারতা ও সহমর্মিতার প্রকাশ দেখতে পাই। গাড়ির চালক সালামকে তিনি নিজের সন্তানের মতোই ভালোবাসেন। নিজেরা যা খান তাই তাকে খেতে দেন। পরিবারের একজন সদস্য বলে মনে করেন তাকে। ধনী হয়েও লোকমান সাহেবের মহৎ মানসিকতার ভিন্নরূপ দেখি ‘বিড়াল’ রচনায় বর্ণিত ধনিকশ্রেণির মাঝে। ধনী হয়ে অঢেল সম্পদের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও অসহায় লোকদের সাহায্য করার মানসিকতা নেই তাদের। তারা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকে সর্বদা, দরিদ্রের প্রতি গল্পের ধনিকশ্রেণির নির্লিপ্ত মানসিকতার বিপরীত চিত্র উদ্দীপকের লোকমান সাহেবের মাঝে দেখি। এ দিকটিই উদ্দীপকের সাথে ‘বিড়াল’ রচনার বৈসাদৃশ্য করে।
উদ্দীপকে বর্ণিত লোকমান সাহেব ধনী ও দরিদ্রের মধ্যকার ব্যবধানকে অস্বীকার করার মাধ্যমে যে মানবিকতা প্রদর্শন করেছেন, তাই ‘বিড়াল’ রচনার মূলসুর।
“বিড়াল’ রচনায় কমলাকান্ত ও বিড়ালের মাঝে কাল্পনিক কথোপকথন তুলে | ধরা হয়েছে। সে কথোপকথনে রয়েছে শ্রেণি বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তোলার প্রচ্ছন্ন আহ্বান। ধনীদের উদ্বৃত্ত সম্পদে যে দরিদ্রের অধিকার রয়েছে, সে কথাই ‘বিড়াল’ রচনার মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
উদ্দীপকে বর্ণিত লোকমান সাহেব একজন মহানুভব মানুষ। নিজের সন্তান | আর গাড়ির চালকের মাঝে কোনো পার্থক্য করেননি তিনি। দুজনকেই সমান চোখে দেখেছেন। নিজের সন্তানের মতোই ভালোবাসেন তাকে। সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য এ ধরনের মনোভাব পোষণ করা সবার দায়িত্ব। ‘বিড়াল’ রচনায় এ বিষয়টিই তুলে ধরা হয়েছে।
পৃথিবীতে ধনী ও দরিদ্রের ব্যবধান মানুষেরই সৃষ্টি। আবার মানুষ চাইলে এ | ব্যবধান কমিয়ে আনতে পারে। এজন্য প্রয়োজন মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি। ধনী অকারণে বিলাসব্যসন পরিহার করে দরিদ্রের মৌলিক চাহিদা পূরণে সচেষ্ট হলে তৈরি হতে পারে স্নেহ-মমতা ও সহানুভূতিপূর্ণ চমৎকার এক সমাজ। ‘বিড়াল’ রচনায় প্রতীকী চরিত্র বিড়ালের সূক্ষ্ম যুক্তিতর্কে মূলত এ ভাবনাটিই ফুটে উঠেছে। উদ্দীপকের লোকমান সাহেবও এ বিষয়টি অনুভব করেছেন অন্তর থেকে। তাই গাড়ির চালক সালামকে নিজের সন্তানের মতোই দেখেছেন । তাই সবদিক বিবেচনায় বলা যায়, উদ্দীপকটি ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের
মূল বক্তব্যকে উপস্থাপন করেছে।
অভিজাত বাসায় কাজ করে মেহেরুননেছা। সেখানে তার আদর-আহ্লাদের অভাব নেই। বাড়ির বড়ো সাহেব মস্ত বড়ো অফিসার। ইদে পরিবারের সবার জন্য কিনে এনেছেন বসুন্ধরা সিটি থেকে নতুন পোশাক। কাজের লোক বলে মেহেরুননেছার জন্য অন্যদের চেয়ে কম দামি পোশাক কেনা হয়নি। বরং সাহেবের মেয়ের জন্য যা যা কেনা হয়েছে, তার জন্যও তাই কেনা হয়েছে। সেগুলো মেহেরুননেছাকে দেওয়া হলে তার চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ে।
মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি রুল এণ্ড কলেজ, ঢাকা। ক. দরিদ্র কার দোষে চোর হয়? এর নম্বর-২/
খ. দরিদ্রের ব্যথায় ব্যথিত হওয়া লজ্জার কথা কেন?
গ. ‘বিড়াল’ রচনায় নির্দেশিত ধনিকশ্রেণির সঙ্গে উদ্দীপকের বড় সাহেবের আচরণে কী ধরনের বৈসাদৃশ্য লক্ষ করা যায়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের বড়ো সাহেবের মানসিকতাই ‘বিড়াল’ রচনার মূলসুর” — মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার করো।
১২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
8
ক দরিদ্র ধনীর দোষে চোর হয় ।
তথাকথিত সমাজব্যবস্থায় দরিদ্রকে সবাই এড়িয়ে চলতে চায় বলে দরিদ্রের ব্যথায় ব্যথিত হওয়াকে সবাই লজ্জাজনক মনে করে।
মানুষের সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি সমাজে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যকার ব্যবধানকে প্রকট করে তুলেছে। সকলেই ধনীদের সুখে সুখী আর দুঃখে দুঃখী হয়। দরিদ্রের জন্য সহমর্মিতা অনুভব করতে আমাদের যেন বাধে। দরিদ্রের প্রতি সহানুভূতিশীল ব্যক্তির জন্য সকলের চোখে থাকে অবজ্ঞার ভাব। তাই দরিদ্রের ব্যথায় ব্যথিত হওয়াকে লজ্জার বলে মনে হয়।