in

ক. নেপোলিয়নের পুরো নাম কী?

উদ্দীপকের মদন সরকার গ্রামের ধনী ব্যক্তিদের আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে দরিদ্র শ্রেণিকে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ হাতে নেয়। কিন্তু ধনী ব্যক্তিরা এই উদ্যোগে সাড়া দেয় না। ফলে একপর্যায়ে গ্রামে চুরির সংখ্যা বেড়ে যায়। এদিকে আলোচ্য রচনায়ও বলা হয়েছে ধনীর সাহায্যের অভাবে ক্ষুধার্ত, দরিদ্র শ্রেণির চৌর্যবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়ার ব্যাপারটি। একইসাথে বলা হয়েছে, যার আছে তাকে আরও বেশি দেয়ার প্রসঙ্গটি।

‘বিড়াল’ রচনায় বিড়াল মানুষের নেতিবাচক বৈশিষ্ট্যকে রোগ বলে অভিহিত করেছে। আর তা হলো যার কিছু নেই তাকে সাহায্য না করে যার সবকিছু আছে তাকে আরও বেশি দেয়ার প্রবণতা। ক্ষুধার্ত, দরিদ্র মানুষকে কেউ খাদ্য দিয়ে অর্থ দিয়ে সাহায্য করতে আসে না। অথচ ব্যক্তিস্বার্থের আশায় ধনী, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের জন্য মহাভোজের আয়োজন করতে কারও আপত্তি নেই। মানুষের এই আচরণই দরিদ্র শ্রেণির সীমাহীন দুর্ভোগের কারণ।

উদ্দীপকে কৃপণ ধনীর দরিদ্রের প্রতি অসহযোগিতামূলক আচরণ ফুটে উঠলেও উপর্যুক্ত বিষয়টি তাতে আলোচিত হয়নি। তাই আলোচ্য মন্তব্যটি উদ্দীপকের আলোকে যুক্তিযুক্ত হয়নি। প্রশ্ন ১৯ শাকিলা একটি দশ-বারো বছরের মেয়ে। সে এক ধনী ব্যবসায়ীর বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করে। দিন-রাত কাজ করলেও খাওয়ার সময় তার ভাগ্যে জোটে উচ্ছিষ্ট সামান্য খাবার। ক্ষুধার জ্বালায় তাই একদিন সে চুরি করে একমুঠো ভাত খায়। এ অপরাধে গৃহকর্ত্রী তাকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। বি এ এফ শাহীন কলেজ, যশোর। প্রশ্ন নম্বর-

ক. নেপোলিয়নের পুরো নাম কী?

খ. বিড়ালের মতে চোর কেন চুরি করে?
গ. শাকিলা ও বিড়ালের জীবন কোন দিক থেকে বিপন্ন? ‘বিড়াল’
প্রবন্ধের আলোকে ব্যাখ্যা করো। ঘ. শাকিলার কাজ নীতিবিরুদ্ধ ও ধর্মাচারবিরোধী – প্রবন্ধ ও
উদ্দীপকের আলোকে মন্তব্যটি বিচার করো।
১৯ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
নেপোলিয়নের পুরো নাম নেপোলিয়ন বোনাপার্ট।
ঘা বেড়ালের মতে, খেতে না পেয়ে চোর চুরি করে “বিড়াল’ শীষক বাধর্মী রচনায় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ দরিদ্র, নিষ্পেষিত ও শোষিত মানুষের বঞ্চনা ও অধিকারের কথা বিড়ালের জবানীতে তুলে ধরেছেন। বেড়ালের মতে, চোর ক্ষুধার জ্বালায় চুরি করতে বাধ্য হয়। তার এই চুরির জন্য সে একা দায়ী নয়। সমাজের ধনিক ও উঁচু শ্রেণির মানুষরাও পরোক্ষভাবে এর জন্য দায়ী। চোরের যদি দুবেলা দুমুঠো অন্ন জুটতো, থাকা পরার অভাব না থাকতো, তবে সে চুরি করতো না।

কিংবা সমাজের ধনী শ্রেণি যদি তাদের উদ্বৃত্ত খাদ্য ও অর্থ নিয়ে দরিদ্র মানুষদের পাশে দাঁড়াতো তবেও চোর চুরি করতো না। তাই অভাবের তাড়নায় এক প্রকার বাধ্য হয়েই চোর চুরি করে। ধনিক শ্রেণির অপচয় ও দান না করার কারণে দ্ররিদ্র খেতে পায় না- এই দিক দিয়ে শাকিলা ও বেড়ালের জীবন বিপন্ন । প্রবন্ধের বেড়াল ক্ষুধার তাড়নায় কমলাকান্তের জন্য বরাদ্দ দুধটুকু খেয়ে ফেলে। কমলাকান্ত এ অপরাধে বেড়ালকে দোষী সাব্যস্ত করেন এবং চুরির শাস্তিবিধান করার জন্য বেড়ালকে লাঠি নিয়ে মারতে উদ্যত হন।

চুরির মতো এই গর্হিত কাজ বাধ্য হয়েই করেছে বলে বেড়াল যুক্তি দেখায়। বেড়ালের ভাষ্য মতে, এই অধর্ম সে পেটের তাগিদেই করেছে। ধনী মানুষ যদি তাদের অপ্রয়োজনী ধন-সম্পদ তার মতো অনাহারী দরিদ্র শ্রেণিকে বিলিয়ে দিতো, তবে সে কিছুতেই চুরি করতো না। বেড়ালের অকাট্য যুক্তি, অধর্ম চোরের নহে- চোরে যে চুরি করে, সে অধর্ম কৃপণ ধনীরা।

গল্পের বেড়ালের মতো উদ্দীপকের শাকিলাও পেটের তাগিদে চুরি করে। সারা দিন হাড়ভাঙা খাটুনির পরও তার জন্য উচ্ছিষ্ট ছাড়া কিছুই বরাদ্দ থাকে না। প্রবন্ধে বেড়ালের দুধ চুরির মতো ক্ষুধার জ্বালা সইতে না পেরে সেও দুমুঠো ভাত চুরি করে ক্ষুন্নিবৃত্তি চরিতার্থ করে। এই অপরাধে গৃহকর্ত্রী তাকে দোষী সাব্যস্ত করে। শাস্তিস্বরূপ তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। শাকিলার জীবনও গল্পের বেড়ালের মতো বিপন্ন। তাই, মৌলিক চাহিদা পূরণের অক্ষমতা ও শাস্তিভোগের দিক থেকে শাকিলা ও বেড়ালের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ে।

ভাত চুরি করেছে বিধায় শাকিলার কাজ নীতিবিরুদ্ধ ও ধর্মাচারবিরোধী। প্রাণী মাত্রই কিছু মৌলিক চাহিদা পূরণ করে জীবন ধারণ করে। ক্ষুধা এমনই এক মৌলিক চাহিদা। ধনী-নির্ধন নির্বিশেষে সকলকেই ক্ষুধার চাহিদা মেটাতে খাদ্য গ্রহণ করতে হয়। উভয়ই সমানভাবে ক্ষুধার কষ্ট অনুভ করে। কিন্তু সম্পদশালীদের অতি বিলাসিতা ও কার্পণ্যের কারণে সমাজের | দরিদ্র শ্রেণি এই মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। প্রবন্ধের বিড়াল সামাজের বঞ্চিত, শোষিত দরিদ্র শ্রেণির প্রতিনিধি। পেটের তাড়নার সে | বাধ্য হয়ে দুধ চুরি করেছে। সে যতই যুক্তি দেখাক না কেন সামাজের দৃষ্টিতে সে চোর হিসেবে চিহ্নিত এবং তার এই চৌর্যবৃত্তি নীতিহীন ও ধর্মবিরূদ্ধ কাজ হিসেবে পরিগণিত।

উদ্দীপকের শাকিলা দরিদ্র। জীবন ধারণের জন্য তাকে গৃহকর্মীর কাজ করতে হয়। উদয়াস্ত সে হাড়ভাঙা খাটুনি করে। ধনিক শ্রেণির শোষণ ও বঞ্চনার শিকার সে। এতো পরিশ্রমের পর তার দুবেলা দুমুঠো ভালো খাবার জোটে না। তাকে উচ্ছিষ্ট খাদ্য খেতে দেওয়া হয়। অনাহার-অর্ধাহারে তার জীবন অতিবাহিত হয়। ক্ষুধার তাড়নায় সে ভাত চুরি করে খেলে সামাজ তাকে দোষী সাব্যস্ত করে। সে যে ক্ষুধার জ্বালায় চুরি করেছে- এই বিষয়টি অন্ধ সমাজের চোখ এড়িয়ে যায়। সমাজ তাকে চুরির মতো নীতিবিরুদ্ধ ও ধর্মাচারবিরোধী কাজ করার জন্য শাস্তি দেয়।

উদ্দীপকের শাকিলা ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের বেড়ালের প্রতিনিধিস্থানীয় চরিত্র। উভয়ে দরিদ্র ও শোষিত শ্রেণির প্রতিভূ। উভয়ই ক্ষুৎপীড়িত। ক্ষুধার জ্বালায় উভয়ই বাধ্য হয়ে চুরি করেছে। প্রবন্ধে বেড়াল যেখানে কমলাকান্তের দুধ চুরি করেছে, সেখানে উদ্দীপকের শাকিলা গৃহকর্তার ভাত চুরি করেছে। এই চুরির মতো অধর্ম সংঘটনের পেছনে কেবল তারাই দায়ী নয়। তারা প্রত্যক্ষভাবে দায়ী হলেও সমাজের ধনিক শ্রেণির মাত্রাতিরিক্ত সম্পদ অর্জন ও গরিবকে দান না-করা এই চুরির জন্য পরোক্ষভাবে দায়ী। কিন্তু সমাজের কাছে এ যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। ক্ষুধার জ্বালাই হোক আর স্বভাব দোষেই হোক সামাজের দৃষ্টিতে তারা ঘৃণ্য চোর হিসেবে বিবেচিত। তাই চুরি করে শাকিলা ও বেড়াল উভয়ই নীতিবিরুদ্ধ ও ধর্মাচার বিরোধী কাজ করেছে।
প্রশ্ন ২০ “মুক্ত কণ্ঠে স্বাধীন বিশ্বে উঠিতেছে ঐকতান
জয় নিপীড়িত প্রাণ! জয় নব অভিযান। জায় নব উত্থান!”
[ফরিয়াদ- কাজী নজরুল ইসলাম | সরকারি বরিশাল কলেজ। প্রশ্ন নম্বর-১/ ক. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকা প্রথম কবে প্রকাশিত হয়?
খ. তাহাতে সমাজের ধনবৃদ্ধি হইবে না” – উক্তিটি ব্যাখ্যা করো। ২ গ. উদ্দীপকে ‘বিড়াল’ রচনার কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে?
বিশ্লেষণ করো। ঘ. উদ্দীপক এবং ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের আলোকে নিপীড়িত সমাজের চিত্র উন্মোচন করো।

What do you think?

Written by Selfish World

Leave a Reply

‘বিড়াল’ রচনায় সাম্যবাদবিমুখ, ইংরেজশাসিত ভারতবর্ষে শোষক-শোষিত

জীবিকার জন্য মধু ও বিড়ালের চুরি করাকে সমর্থন করা যায় না।